জানুন কেন অন্যের ব্লগ কনটেন্ট কপি করা উচিত না

একটি ভুল যা সমস্ত নতুন ব্লগাররা করে থাকে তা হল, অন্যের ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইট থেকে কনটেন্ট কপি করে নিজের সাইটে ব্যবহার করা।

কারণ তারা এই ফিল্ডে নতুন হয়ে থাকে তাই বেশিরভাগই জানেনা যে এতে ক্ষতি হতে পারে। তাছাড়া একদমই নতুন হলে কিভাবে,

আর্টিকেল লিখতে হয় তা না জানা বা কিভাবে আর্টিকেল আইডিয়া পাবো ইত্যাদি সম্পর্কে না জানা থাকার কারণে কপি করে থাকে।

কিন্তু সত্যি কথা বলতে এই বিষয়টি জেনে রাখা অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ যে অন্যের ওয়েবসাইট থেকে আর্টিকেল বা কনন্টেন্ট,

কপি করা একদমই উচিত না কারণ এতে একাধিক সমস্যায় পড়তে হতে পারে এবং ব্লগিং ক্যারিয়ারেও বেশ এফেক্ট করতে পারে।

চলুন আমরা জেনেনি যে অন্যের ওয়েবসাইট থেকে কনটেন্ট বা ব্লগ পোস্ট কপি করে লিখলে ঠিক কি কি সমস্যাগুলি হতে পারে।

বা অন্যের ওয়েবসাইট থেকে কেন কনটেন্ট কপি করে নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইটে ব্যবহার করা একদমই উচিত না।

জানুন কেন অন্যের ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইট থেকে কনটেন্ট কপি করে দেখা উচিত না

প্লাগিয়ারিজম বা Plagiarism কি?

শুরু করার আগে অবশ্যই জেনে রাখুন যে এই কনটেন্ট কপি করা শব্দটিকে ইংরেজিতে Plagiarism বা প্লাগিয়ারিজম বলা হয়।

এর অর্থ হল অন্যের জিনিস কপি বা চুরি করা এবং কৃতিত্বও না দেওয়া অর্থাৎ চুরি করা এবং পরে তা সম্পর্কে মিথ্যা বলা বা নিজের বলে চালিয়ে দেওয়া।

খুব সহজে কোথায় বললে Plagiarism হল একটি প্রতারণামূলক কাজ আর যা কনটেন্ট রাইটিং এর সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।

কেন অন্যের ওয়েবসাইট থেকে কনটেন্ট কপি করা উচিত না?

১. স্বল্পমেয়াদি লাভ

আপনি ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইট শুরু করেছেন ভিসিটর্স ও পাঠকদের সাথে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক তৈরি করে তা আরো বাড়িয়ে তোলার জন্য।

কিন্তু আপনি যদি নিজে কনটেন্ট তৈরি না করেন অর্থাৎ অরিজিনাল কনটেন্ট না বানিয়ে অন্যের সাইট ও এখান থেকে ওখান থেকে,

কনটেন্ট কপি করে নিজের সাইটে পাবলিশ করেন তাহলে তাতে আপনি শুধুমাত্র স্বল্পসময়ের জন্যই দর্শক বা ভিসিটর্স পাবেন,

যারা আপনার কনটেন্ট এর প্রতি আকর্ষিত হবে এবং আগ্রহ দেখাবে। কারণ আপনি যদি একটু নিজে ভেবে দেখেন যে,

একটি বিসনেস বা ব্যবসাকে বাড়িয়ে তুলতে এবং দীর্ঘমেয়াদি করে তুলতে হলে তার কৌশল কখনোই এটি হতে পারেনা।

আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইটটিও একটি ব্যবসা আর তা বাড়িয়ে তোলার জন্য এবং পাঠকদের সাথে দীর্ঘমেয়াদি,

সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য অবশ্যই আপনাকে সঠিক কৌশল সহ পরিশ্রম এবং সময় দিয়ে তা বাড়িয়ে তুলতে হবে।

২. ডিএমসিএ বা DMCA এর সমস্যায় পড়তে পারেন

DMCA কথার পুরো অর্থ হল ডিজিটাল মিলিনিয়াম কপিরাইট এক্ট, এটি একম একটি আইন যা প্রত্যেকের ডিজিটাল বা অনলাইন,

কাজ গুলিকে সুরক্ষা প্রদান করে এবং দেখে যে তাদের কাজগুলি যাতে চুরি না হয় এবং যদিও হয় তার প্রতি আইনানুগ ব্যবস্থা যাতে নেয়।

যদি কোন কনটেন্ট চুরি করা হয় তাহলে তা প্রথমে টেক ডাউন করা হবে এবং তার ওপর DMCA যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

অর্থাৎ আপনি যদি কোন ওয়েবসাইট থেকে কনটেন্ট কপি করেন, যাকিনা অনলাইন এর ক্ষেত্রে এক ধরণের চুরি করা,

এবং যেই সাইট থেকে কপি করছেন তার মালিক যদি টের পায় তাহলে সে আপনার এবং আপনার ব্যাবসার নামে DMCA -তে রিপোর্ট করতে পারে।

আর যা হয়তো আপনি কেন, কোন ওয়েবসাইট মালিক বা কনটেন্ট ক্রিয়েটরই চাইবে না যে এরকম কিছু তাদের এবং তাদের ব্যবসার সাথে হোক।

আরো জানুন: সেরা ৭টি ওয়েবসাইট কপিরাইট ফ্রি ছবি ডাউনলোড করার জন্য

৩. পাঠকরা আপনার সাইট পছন্দ করবে না

আপনি যদি ভেবে থাকেন যে ব্লগ সাইট এবং বিভিন্ন জায়গা থেকে কনটেন্ট কপি করবেন এবং তা নিজের বলে চালিয়ে নেবেন আর পাঠকরা তা বুছতে পারবেন না,

তাহলে একদমই ভুল ভাবছেন। কারণ কেউ নির্দিষ্ট একটি ওয়েবসাইটে ভিসিট করেনা, তার আপনার সাইট এর পাশা পাশি,

এইরকম আরো বিভিন্ন সাইট এবং অনলাইন প্লাটফর্ম ভিসিট করে একই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য এবং কিছু শেখার জন্য।

তাই আপনি যদি এরকম কিছু করেন তাহলে তারা খুব সহজেই জেনে যাবে যে আপনি এই কাজ করছেন এবং তারা কখনোই,

আর আপনার সাইট ভিসিট করতে চাইবেনা এবং আপনার সাইট এর রেপুটেশন আসতে আসতে পাঠকদের কাছে কমতে থাকবে।

৪. ব্লগ সাইট বা কনটেন্ট পেনালাইজ ও ডিলিট

আপনি কি জানেন DMCA এর মালিক কে? গুগল বা Google এর মালিকানাধীন হল এই DMCA বা Digital Millennium Copyright Act.

তাই আপনি যদি কনটেন্ট কপি করেন তা পাঠকদের আগে জানতে পারে বা পারবে এই গুগল, যে আপনি এরকম কাজ করছেন।

আর আমরা সবাই জানি গুগল একদমই ডুপ্লিকেট কনটেন্ট পছন্দ করেনা এবং এরকম কিছু করলে তার যথাযথ ব্যবস্থা গুগল নেয়।

আর এই ক্ষেত্রে আপনার ব্লগ কনটেন্ট বা সম্পূর্ণ ব্লগ সাইটটিই পেনালাইজ অথবা গুগল তার সার্চ ইঞ্জিন থেকে ডিলেট করে দিতে পারে।

এবং আমি নিজে বেক্তিগত ভাবে মনে করি যা অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় একজন ওয়েবসাইট মালিকের ক্ষেত্রে যাতে সে এরকম না করে।

যদিও এটি বিরল ঘটনা, তবে অবশ্যই আপনি চাইবেন না যে আপনার সাধের এবং বহু কষ্টের ব্লগ সাইটটির সাথে এরকম কিছু হোক।

অবশ্যই পড়ুন: ৭+ সেরা কপিরাইট ফ্রি স্টক ভিডিও সাইট

৫. এসইও -তে সমস্যা

অন্যের কনটেন্ট কপি করে ব্যবহারের করার ক্ষেত্রে ওপরের সমস্যাগুলি ছাড়া আরও একটি যে সমস্যার মধ্যে পড়তে পারেন,

তা হল আপনার সাইটের এসইওর ক্ষতি এবং ওয়েবসাইট ও সাইট এর রেঙ্ক কমে যাওয়া।

ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইটের ক্ষেত্রে এসইও ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা একজন ব্লগ সাইট মালিকই জানেন। কারণ এটি হল,

সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর উপায় সাইটে অর্গানিক ট্রাফিক নিয়ে আসা এবং তা আরো বৃদ্ধি করা। তবে একথাট একদমই ভুলে যাবেন না যে,

কনটেন্ট ইজ কিং বলে একটি কথা আছে, আর আপনার কনটেন্টই যদি ডুপ্লিকেট হয় এবং কপি করা হয় তাহলে এসইও সাথে দেবেনা।

অর্থাৎ আপনি যদি কনটেন্ট কপি করেন তা গুগল সহ বাকি সার্চ ইঞ্জিনও বুঝে যাবে যে তা ডুপ্লিকেট কনটেন্ট এবং তা আগেই থেকেই অন্য সাইটে উপস্থিত আছে।

আর এই কারণে কোন সার্চ ইঞ্জিনই আপনার কনটেন্ট গুলিকে রেঙ্ক করবেন এবং ধীরে ধীরে আপনার সম্পূর্ণ সাইটটিই রেঙ্ক হারাবে।

আমাদের শেষ কথা,

সবার শেষে এটাই বলবো যে আপনি যদি নিজের সাইটটি বড় করে তুলতে চান এবং একটি অনলাইন ব্যবসায় পরিণত করতে চান,

তাহলে অবশ্যই কনটেন্ট কপি এবং এই সমস্ত কাজ করা থেকে বিরত থাকুন কারণ আল্টিমেটলি তাতে আপনারই ক্ষতি হবে।

একথা ঠিক যে সম্পূর্ণ অরিজিনাল এবং ইউনিক কনটেন্ট তৈরি করা একদমই সহজ বিষয় না, তা সে আপনি হন অথবা অভিজ্ঞ কোন ব্লগার বা কনটেন্ট রাইটারই হোক।

তবে সম্পূর্ণ রূপে একটি সাইটের কনটেন্ট কপি করে অথবা অনুবাদ করে নিজের সাইটে পাবলিশ করাটাও সঠিক কাজ ও উপায় না।

একান্তই যদি সমস্যা হয় রিসার্চ করুন তা পড়ুন ও বুঝুন এবং তারপর নিজের অভিজ্ঞতাকে নিজের মতো করে কনটেন্ট তৈরি করুন।

তো বন্ধুরা আশা করছি আপনার এখন জানতে পেরেছেন যে কেন অন্যের ব্লগ বা ওয়েব সাইট থেকে কনটেন্ট কপি করে নিজের সাইটে ব্যবহার করা উচিত না।

অথবা তা করলে আপনি ঠিক কি কি সমস্যার মধ্যে পড়তে পারেন। আর আপনাদের যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে,

এবং কিছুটা হোক শিখে তাহলে অবশ্যই অন্যদের সাথে শেয়ার করুন এবং কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানান।