আজকে আমরা জানবো যে কিভাবে আর্টিকেল লিখতে হয় বা বাংলা আর্টিকেল লেখার সঠিক নিয়ম এবং কৌশল গুলি কি।
যদি আপনি নিজের ব্লগ সাইট শুরু করতে চান বা অলরেডি যদি একটি থাকে, অথবা ফ্রিল্যান্সার হিসাবে বাংলা কনটেন্ট রাইটিং করতে চান,
তাহলে অবশ্যই আপনার বাংলা আর্টিকেল বা কনটেন্ট রাইটিং এর সঠিক নিয়ম ও কৌশল গুলি কি তা ভালো ভাবে জানতে ও বুছতে হবে।
তা নাহলে আপনার লেখা আর্টিকেল বা পোস্ট, না আপনার ক্লায়েন্ট পছন্দ করবে আর না অডিয়েন্স এবং সার্চ ইঞ্জিন।
আর এই আর্টিকেল লেখার মধ্যে আপনাকে যে বিষয়টির ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে তা হল অনন্য বা ইউনিক কনটেন্ট।
ইউনিক কনটেন্ট শব্দটি এসইও এর সাথে সম্পর্কিত যার অর্থ হল অরিজিনাল এবং অন্য কোন জায়গা থেকে নেওয়া ডুপ্লিকেট না।
কারণ ইউনিক কনটেন্ট গুগল সহ সমস্ত সার্চ ইঞ্জিনে রেঙ্ক করার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আপনার কনটেন্ট যদি অন্য কোন জায়গা থেকে কপি করা হয় অর্থাৎ ডুপ্লিকেট হয় তবে তা সম্পূর্ণ ভাবে সার্চ ইঞ্জিনের বিরুদ্ধে হবে।
আর ফলস্বরূপ কনটেন্টকে কখনোই সার্চ ইঞ্জিনে রেঙ্ক করা হবে না এবং ডুপ্লিকেট কনটেন্ট পাবলিশ করার জন্য আপনার সাইটকে পেনালাইজও করে দেওয়া হতে পারে।
তাহলে এখন প্রশ্ন হল যে একটি ইউনিক ও সঠিক ভাবে আর্টিকেল লেখার নিয়ম কি যা ক্লায়েন্ট ও অডিয়েন্স সবাই পছন্দ করবে।
এবং যা সহজে সার্চ ইঞ্জিনে রেঙ্কও করতে পারবে।
তাহলে চলুন এবার আমরা নিচে স্টেপ বাই স্টেপ জেনেনি যে কনটেন্ট রাইটিং এর নিয়ম কি বা কিভাবে করতে পারবো।
কিভাবে আর্টিকেল লিখতে হয় বা লেখার নিয়ম

প্রথমেই আপনাদের বলে রাখি যে আপনি যদি বাংলা ছাড়াও অন্য কোন ভাষাতে কনটেন্ট রাইটিং করতে চান যেরকম, ইংরেজি বা হিন্দি।
তাহলেও আপনি এই একই পথ বা উপায় গুলি অনুসরণ করতে পারেন কারণ এখানে ভাষার সাথে কনটেন্ট লেখার নিয়মে কোন পরিবর্তন হয় না।
১. আর্টিকেল টপিক নির্বাচন করুন (Pick the right topic)
আর্টিকেল বা কনটেন্ট রাইটিং এর প্রথম ধাপ হল আপনি কোন বিষয়ের ওপর আর্টিকেল লিখতে চান সেই টপিক নির্বাচন করা।
আর তা নির্বাচন করার জন্য আপনাকে অনেকগুলি বিষয় ও দিক ভেবে ঠিক করতে হবে এবং যার জন্য চাই অনলাইন রিসার্চ।
কারণ আপনার কাছে হয়তো বেশ কয়েকটি টপিক বা সাব্জেক্ট থাকতেই পারে, কিন্তু সেই বিষয়ে আপনি কতটা জানেন বা অভিজ্ঞ,
এবং যাদের জন্য লিখতে চাইছেন তারা কি এই বিষয়ে জানতে ও পড়তে আগ্রহ? আর হলেও কতটা আগ্রহ বা চাহিদা কতটা।
এই সমস্ত বিষয় গুলি আপনাকে অবশ্যই সঠিক ভাবে জানতে হবে। যেরকম ধরুন আপনি যে বিষয়ে লিখতে চাইছেন,
সেই সম্পর্কে আপনারই যদি সঠিক অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে আপনি কখনোই সেই বিষয়ে ভালো ভাবে লিখতে পারবেন না।
আর আপনার যদি সেই বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও আগ্রহ দুটিই না থাকে তাহলে তার খারাপ প্রভাবটি সম্পূর্ণ ভাবে আপনার আর্টিকেলই পড়বে।
আবার অন্যদিকে আপনি যে বিষয়ের ওপর লিখতে চাইছেন সেই বিষয় নিয়ে যদি অডিয়েন্সরা জানতেই না চায় বা আগ্রহ হয়।
তাহলেও আবার আপনার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা লাগিয়ে কনটেন্ট তৈরি করার পরেও আপনার সমস্ত পরিশ্রম ব্যর্থ হতে পারে।
২. অনলাইন রিসার্চ করুন (Do your online research)
কোন টপিকের ওপর লিখতে চান, তা নির্বাচন করার পর আপনার দ্বিতীয় যে কাজটি করতে হবে তা হল অনলাইন রিসার্চ।
কনটেন্ট রাইটিংয়ে ক্ষেত্রে অনলাইন রিসার্চ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা সে কোন বাংলা কনটেন্ট হোক বা ইংরেজি ও হিন্দি।
অনলাইন রিসার্চ ছাড়া আপনি কখনোই একটি ভালো, ইউনিক, এবং প্রতিযোগিতামূলক আর্টিকেল লিখতে পারবেন না।
রিসার্চের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন, যেই বিষয়ের ওপর আপনি লিখবেন তার ওপর কত গুলি আর্টিকেল আগে থেকে ইন্টারনেটে আছে।
তারা ঠিক কিভাবে লিখেছে, কোন কোন বিষয় গুলি কভার করেছে এবং কোন রিসোর্স গুলি সেই আর্টিকেল লিখতে ব্যবহার করেছে।
এবং তা জানার পর প্রথমত আপনি নিজের কনটেন্ট তৈরির জন্য আরো বেশি তথ্য, রিসোর্স ও আইডিয়া পেয়ে যাবেন।
এবং নিজের কনটেন্টকে তাদের থেকে আরো বেটার ও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে পারবেন সার্চ ইঞ্জিন ও অডিয়েন্সের জন্য।
৩. আপনার পয়েন্টগুলি রূপরেখা দিন (Write an outline)
প্রতিবারই কনটেন্ট বা আর্টিকেল লেখার সময় আমারদের কাছে বিভিন্ন আইডিয়া ও ইনফরমেশন থাকে বা আমরা কালেক্ট করে থাকি।
তবে কনটেন্ট লেখার জন্য শুধুমাত্র সেই সমস্ত আইডিয়া ও ইনফরমেশন গুলিই সেখানে ব্যবহার করা উচিত যতটা জরুরি বা দরকার।
প্রয়োজন অতিরিক্ত বা অপ্রয়োজনীও তথ্য ব্যবহার করার মানে হল অযথা কনটেন্ট এর দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে তোলা যা একেবারেই ঠিক না।
কারণ অডিয়েন্স বা পাঠকরা সবসময় চায় কম দৈর্ঘের মধ্যে স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড ইনফরমেশন বা তথ্য তারা যাতে পায়।
তবে এর মানে এই না যে খুব বড় কনটেন্ট লেখা উচিত না, সেরকম একদমই বলছি না আর প্রয়োজন হলে অবশ্যই বড় কনটেন্ট লিখবেন।
এখানে আমি যেটা বলতে চাইছি তা হল যেখানে প্রয়োজন নেই সেখানে কখনোই অপ্রয়োজনীয় তথ্য ব্যবহার করে কনটেন্ট এর দৈর্ঘ্য বাড়াবেন না।
তাই আপনার বিষয়বস্তু যতটা প্রয়োজন তার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখুন বা যেই বিষয়গুলি প্রয়োজন ও গুরুত্বপূর্ণ সেগুলি ফাইন্ড আউট করুন।
এবং সেই পয়েন্ট গুলির মাধ্যমে একটি রাফ আর্টিকেল স্ট্রাকচার বা রূপরেখা তৈরি করুন।
এতে আপনার কনটেন্ট লেখার সময় শুধুমাত্র সঠিক ও প্রয়োজনীয় পয়েন্ট গুলি ব্যবহার করে ও সঠিক গঠনে আর্টিকেল লিখতে অনেক সুবিধা হবে।
৪. কীওয়ার্ড রিসার্চ (Do keyword research)
কীওয়ার্ড রিসার্চ হল অন-পেজ এসইওর পার্ট আর আর্টিকেল বা কনটেন্ট লেখা শুরু করার আগে অবশ্যই এটি করে নেওয়া উচিত।
আপনি যদি একটি ইউনিক এবং এসইও অপ্টিমাইজ কনটেন্ট তৈরি করতে চান যা সার্চ ইঞ্জিনে সহজে রেঙ্ক করতে পারবে সেই ক্ষেত্রে,
আপনার কনটেন্ট টপিক, রিসার্চ এবং প্রয়োজনীয় পয়েন্টগুলি বেছে নিয়ে তার একটি আউটলাইন তৈরি করার পর কীওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে।
এর মাধ্যমে আপনি সার্চ ইন্টার্ন এবং সেই সমস্ত কীওয়ার্ড গুলি জানতে পারবেন যার জন্য আপনার আর্টিকেল সার্চ ইঞ্জিনে রেঙ্ক করতে পারবে।
এসইও বা কীওয়ার্ড রিসার্চ সম্পর্কে আপনি যদি না জেনে থাকেন বা যদি আরো ভালো ভাবে জানতে চান তাহলে নিচের আর্টিকেলগুলি পড়তে পারেন।
৫. একটু দুর্দান্ত ও আকর্ষণীয় হেডলাইন লিখুন (Write a great headline)
ওপরের জিনিস গুলি সম্পর্ণ করার পর এখন আপনার আর্টিকেল লেখার পালা আর তার জন্য সবার প্রথমেই যেটি করতে হবে,
তা হল একটি আকর্ষণীয় টাইটেল বা হেডলাইন তৈরি করুন যা অবশ্যই ছোট কিন্তু আপনার মেইন কনটেন্টকে প্রতিফলিত করবে।
তার সাথে কীওয়ার্ড রিসার্চ দ্বারা আপনার নির্বাচন করার মেইন বা ফোকাস কীওয়ার্ড অবশ্যই হেডলাইন বা টাইটেল এর মধ্যে ব্যবহার করুন।
কারণ টাইটেলের মধ্যে কীওয়ার্ড ব্যবহার করলে আপনার কনটেন্ট অন-পেজ এসইওর জন্য আরো অপ্টিমাইজ হবে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আপনি যেই বিষয় নিয়ে লিখছেন ইন্টারনেটে আগে থেকেই সেই একই বিষয়ে আর্টিকেল পেয়ে যাবেন।
তাই তারা যে হেডিং বা টাইটেল ব্যবহার করেছে সেই একই টাইটেল ব্যবহার করতে যাবেন না চেষ্টা করুন ইউনিক টাইটেল দেওয়ার।
তবে তার সাথে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনার টাইটেল যাতে ছোট ও আকর্ষণীয় হয় এবং মেইন কনটেন্টকেও প্রতিফলিত করে।
৬. একটি মনোরম ভূমিকা লিখুন (write a captivating intro)
সর্বদা আর্টিকেল লেখা শুরু করুন সংক্ষিপ্ত একটি ভূমিকা বা ইন্ট্রো দিয়ে যাতে পাঠকরা বুছতে পারে তারা কি জানতে ও শিখতে চলেছে।
ভূমিকার মাধ্যমে প্রথমেই পাঠকদের মনোযোগ বা দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করুন যাতে তারা সহজে বা খুব তাড়াতাড়ি আর্টিকেল ছেড়ে না যায়।
আর আপনি এই বিষয়টি বিভিন্ন ভাবে করতে পারেন যেরকম আর্টিকেল বিষয় নিয়ে কিছু ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্ট ও স্টাটিস্টিক এর মাধমে।
তারপর আপনার পোস্ট বা কনটেন্ট এর উদ্দেশ্য কি, কোন বিষয় গুলির সমাধান আপনি এখানে ব্যাখ্যা করতে চলেছেন তা অবশ্যই তুলে ধরুন।
৭. মেইন বা প্রধান ব্লগ পোস্ট অংশ (The main writing part)
এখন আমরা জানবো যে আর্টিকেল এর মেইন বা প্রধান ব্লগ পোস্ট অংশটি কিভাবে লিখতে হয় বা লেখার নিয়ম ও কৌশল কি।
- প্যারাগ্রাফ
আর্টিকেল লেখার সময় প্যারাগ্রাফ বানিয়ে বানিয়ে লিখুন এবং অবশ্যই খেয়াল রাখুন যাতে প্যারাগ্রাফে শব্দের সংখ্যা কম হয়।
উদাহরণ হিসাবে আপনি আমার এই আর্টিকেলের প্যারাগ্রাফ ও সেখানে ব্যবহৃত শব্দ বা ওয়ার্ডের সংখ্যা দেখতে পারেন।
এরকম ভাবে লিখলে পাঠকদের পড়তে অনেক সুবিধা হয় এবং তারা মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়েন।
- হেডিং
আমরা আর্টিকেলের মধ্যে H1 থেকে H6 পর্যন্ত ট্যাগ ব্যবহার করতে পারি। তাই সঠিক ভাবে এই ট্যাগ গুলি আর্টিকেলের মধ্যে ব্যবহার করুন।
সাধারণত H1 ট্যাগ আমাদের আর্টিকেল টাইটেল হয় তাই H1 বাদে অন্তত H2 এবং H3 ট্যাগ দুটি সাব হেডিং হিসাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
- বুলেটস
যেখানে সংক্ষিপ্ত তথ্য ও তালিকা ইত্যাদি বিষয়বস্তু গুলি লিখবেন সেখানে বুলেটস এর ব্যবহার করে লিখুন যেরকম এখানে ব্যবহার করা হয়েছে।
- ইমেজ বা ছবি
ব্লগ পোস্টার মধ্যে অবশ্যই কম করে হলেও একটি আপনার ব্লগ পোস্টের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক ইমেজ বা ছবি ব্যবহার করুন।
ব্লগ পোস্টের সাথে প্রাসঙ্গিক ছবি কনটেন্ট এর মধ্যে ব্যবহার করলে পাঠকদের বুছতে আরো ভালো সুবিধা হয় সাথে সাথে,
অন-পেজ এসইওর ক্ষেত্রেও এটি অনেক সাহায্য করো। তবে ইমেজকে অন-পেজ এসইওর জন্য অপ্টিমাইজ করার ক্ষেত্রে
ইমেজ এর অল্ট ট্যাগ এর মধ্যে কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে একদমই ভুলবেন না।
৮. ব্লগ পোস্ট প্রুফরিড এবং এডিট
অনেকেই আছে যারা অনেক সময় ধরে বা সময় ব্যয় করে আর্টিকেল লেখার পর তা পাবলিশ করার জন্য খুবই তারা হুর করে থাকে।
এবং এত সময় ধরে লেখা আর্টিকেল বা কনটেন্টটি প্রফরিড অর্থাৎ পড়ে দেখানো যে সেখানে কোন ভুল ইত্যাদি আছে কিনা।
এরকম একদমই করবেন না আর্টিকেল লেখার পর অবশ্যই কম করে হলেও এক থেকে দুইবার সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন এবং,
সেখানে যদি কোন ভুল থাকে তা সম্পাদন বা এডিট করুন।
আমাদের শেষ কথা:
তো বন্ধুরা আমি আশা করছি যে আপনারা এখন জানতে পেরেছেন একটি ইউনিক আর্টিকেল কিভাবে লিখতে হয় বা আর্টিকেল লেখার নিয়ম ও কৌশল গুলি ঠিক কি।
আর আমি এখানে বহুবার এসইও শব্দটি উল্লেখ করেছি, আপনি যদি এই বিষয় অর্থাৎ এসইও নিয়ে আরো ভালোভাবে জানতে চান,
তাহলে আমাদের সাইটে অনেক আগেই এসইও সম্পর্কিত সমস্ত আর্টিকেল পাবলিশ করা আছে যা আপনি চেক করতে পারেন।